দ্যা পাইপ
গতকাল শীতবিকেলে একটা সুন্দর সান্ধ্যভ্রমণের সময় আমি
আমার পুরনো পাইপ খুঁজে পেয়েছি। আমার অতীতে কোন এক বসন্তের অপরিণত আনন্দে যেখানে
চওড়া আলোয় ঘন নীল পাতারা ঝলমল করে উঠত, আমি সেই অতীতের দিকে আমার সিগারেট ছুঁড়ে ফেলেছি।
আর আমি হাতে তুলে নিয়েছি এক রাশভারী মানুষের প্রচণ্ড রাশভারী সেই পাইপ। যে একটুও
বিরক্ত না হয়ে ধূমপান করে যেতে চায় অনেকক্ষণ। আর সেটাকেই ভেবে নিতে চায় তার কাজ। কিন্তু
এই প্রত্যাশিত বিষয়টা আমার ভেতরে ছিলই তবুও আমি এর জন্য প্রস্তত ছিলাম না। কারণ,
এক’দুটান দেওয়ার পরই আমার মনে পড়ল বেশ কিছু জরুরী বইয়ের কথা যা আমার লেখার কথা
ছিল। আর আমার মন সরে এল এক আশ্চর্য নরম অনুভূতির দিকে। আমি নিঃশ্বাস নিতে শুরু
করলাম বিগত শীতের সেই হাওয়ায় যা আমার দিকেই ফিরে আসছিল।
ফ্রান্সে ফেরার পর আমি আমার একমাত্র প্রেমিকার সাথে কোনো
যোগাযোগ করিনি। আর এখন এই একবছর আগের লণ্ডন আমার চোখের সামনে। লণ্ডনে আমি একাই
ছিলাম। সম্পূর্ণ একা। আর সেখানে আমার প্রিয় কুয়াশা তার অদ্ভুত একটা গন্ধ নিয়ে আমার
খোলা জানলা দিয়ে ঘরের ভিতর এসে আমার মাথার ভেতরটা সম্পূর্ণ দখল করে নিত। একটা
অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘরে সমস্ত লেদারের আসবাবের ওপর কয়লার গুঁড়ো ছড়ালে যেমন গন্ধ ছড়ায়
আমার তামাকের গন্ধও সেরকমই অন্ধকারময় হত। আর কালোবেড়ালটা গুটিশুটি মেরে বসে থাকত
ফায়ার প্লেসের কাছেই। একটা আয়া তার লাল হাতে অনেকগুলো কয়লা ঝুড়ি থেকে বার করে
ফায়ারপ্লেসে ঢালত। কয়লার ঝুড়ি থেকে ফায়ারপ্লেসের লোহার আগুনদানিতে সেই কয়লা ঢালার
শব্দ হতে থাকত। একমাত্র ডাকপিয়নের প্রচণ্ড জোরে দরজায় কড়া নাড়ার শব্দে আমি বেঁচে
উঠতাম! আবার আমি আমার জানলা দিয়ে একটা নির্জন বর্গাকার ভূমিতে কিছু অসুস্থ গাছেদের
দেখতাম। সেখানে, আমি শীতকালে একটা উন্মুক্ত সমুদ্রও দেখেছিলাম, যা আমি অনেকবার
পেরিয়ে গেছি সেই শীতে, কালো ধোঁয়ায় আর শীতে কাঁপতে কাঁপতে, যেখানে আমি আমার
প্রেমিকা যে আমার প্রিয় ভক্তও তার সাথেই ছিলাম। ও একটা পর্যটকের পোশাক পড়েছিল, একটা
লম্বা গাউন যা পথের ধুলোময়লায় মলিন হয়েছিল, ওর ঠাণ্ডা কাঁধে একটা কোট ঝোলানো ছিল। যেন
কোনো ধনী মহিলা সমুদ্রে বেড়াতে এসে সেগুলো ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে আর কোনো গরীব মেয়ে তা
কুড়িয়ে নিয়েছে অন্য কোনো ঋতুতে পড়বে বলে। আমার প্রেমিকার গলায় একটা অদ্ভুত রুমাল
ঝুলছিল, যার মধ্যে একদিকে ভয়ানক একটা ক্ষত আরেকদিকে আবার হাত নেড়ে বিদায় সম্ভাষণও
ছিল।
স্টিফেন মালার্ম
শার্ল বোদল্যেয়ার অনুপ্রাণিত সিম্বলিজম কবিতার অন্যতম
কবি স্টিফেন মালার্ম ছিলেন কুড়ি শতকের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফরাসি কবি। পরাবাস্তব
ও জাদুবাস্তবকে কবিতায় এনে শিল্পের এক নতুন ধারার অন্যতম প্রবর্তনকারী। মালার্মের
অনুবাদ অত্যন্ত শক্ত বলেই মনে করেন অনুবাদকেরা। ২০-এর শতকে ফরাসি কবিতার এই বলিষ্ঠ
কবি কবিতা ছাড়াও প্রচুর ছোটোগল্প ও গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ লিখেছেন।
চমৎকার অনুবাদ। ভালো লাগল।
ReplyDeleteদারুণ অনুবাদ রিমি।
ReplyDeleteখুব ভালো অনুবাদ রিমি।
ReplyDelete