Friday, October 12, 2018

কবিতা- জেরার্ড ম্যানলি হপকিনস (অনুবাদ- ঈশানী বসাক)









খুব কঠিন ছিল এই বাঁধন খোলা 


এই বাঁধন খোলা খুব কঠিন ছিল
রামধনু উজ্জ্বল হয়ে ওঠে কিন্তু শুধু ওঁর ভাবনাতেই
কিন্তু ওই নিঃসঙ্গতায় নয়
কারণ কেই বা রামধনু আবিষ্কার করে বানায়?
কত মানুষ দাঁড়িয়ে জলপ্রপাতের কাছে
সবার চোখে তুমি আলাদা
তবুও তোমার প্রতিটি বিন্দু যেন একজন আরেকজনের থেকে দূরত্ব বজায় রাখে।
সূর্যের আলো সেই ঝরনার উপর পড়ে লিখে ফেলে
যা শুধু আমার চোখে অথবা ভাবনায় আছে
এই বাঁধনটা খোলা কঠিন ছিল।


সুখী ভিখারী


ম্যাগডালেন থেকে দূরে ব্রিজের কাছে
একটা সমতল জায়গা আছে।
গ্রীষ্মকালে সেখানে যখন বৃষ্টি পড়ে
ফুলের টক মিষ্টি গন্ধ ছড়ায় বাতাসে
ওই সোনালী হাসিখুশি ফুলগুলো কমলালেবু গাছের কাছে ঝোলে

............
ওই মানুষটা হৃদয় বড় চমৎকার
যাতে কাঁটা বিদ্ধ করা বড়ো দুষ্কর
ওই অমানবিক কষ্ট ওকে ছিঁড়ে ফেলতে পারে না
একটা ছোট্ট উপহার ওকে খুশি করে
যেন ওই গরীব পকেটের খুচরো
আমার দেওয়া পয়সাটা ওর কাছে বড় করুণ হয়ে যায়।


এলুই ভ্যালিতে

আমি একটা বাড়ির গল্প জানি যেখানে সবকিছু ভাল
আমার কাছে , ঈশ্বর সব জানেন , কিছুই চান না
ছোট্ট নিঃশ্বাস ফেলে আসেন যেন মিষ্টি একটা অরণ্যের সুবাস নিয়ে এলেন।
ওই সম্মান প্রদর্শন দয়ালু মানুষগুলোকে আড়াল বানানো
যেমন পাখি তার ডানা দিয়ে ডিমকে আড়াল করে
ইচ্ছে আর শান্ত রাত বসন্ত নিয়ে আসে
তাই তো মনে হয় আমার , তাই হয় নাকি


সুন্দর সেই জলপ্রপাত জঙ্গল আর উপত্যকা
বাতাস যেন এই অপূর্ব জগত বানিয়েছে
শুধু এখানে যারা থাকেন তারা কোনো উত্তর দেন না
ঈশ্বর আর আত্মার প্রেমিক দোলাচলে ভোগেন
যে প্রাণী ব্যর্থ হয় তাকে সম্পূর্ণতা দেন
কারণ তিনি সর্বশক্তিমান , পিতা এবং বন্ধু।


বসন্ত এবং পতন 


মার্গারেট তুমি কী দুঃখ যাচ্ছো?
ওই সোনালী বাগানের না চলে যাওয়া নিয়ে !!
যে গাছের পাতাগুলো যেন কোনো পুরুষের সম্পদ
তোমার টাটকা ভাবনারা এসব ভাবে ?
আরে তোমার হৃদয়ের যতো বয়স বাড়বে
এসব শীতল দৃশ্য আরো দেখতে পাবে
এসব দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলো না ।
ঝরে যাওয়া মৃত পাতারা মিথ্যে বলে জানি
তবুও কেন চোখের জল ফেলো তুমি ?
শোনো শিশু তোমার যাই নাম হোক
দুঃখ এবং বসন্ত কিন্তু এক ই ব্যাপার
তোমার মুখ আর মন যা বলে না
তা হৃদয় জানে অশরীরী আন্দাজ করে
এ জন্যই পুরুষের জন্ম
তবে মার্গারেট তুমি কেন দুঃখ পাও?


((জেরার্ড ম্যানলি হপকিনস একজন জেসুইট যাজক ছিলেন যার কবিতা তাঁর মৃত্যুর পর খ্যাতি লাভ করেছিল। জন্মগ্রহণ করেছিলেন স্ট্র্যাটফোর্ড , ইউ কে। ওঁর কবিতা মূলত ধর্ম এবং প্রকৃতি কে নিয়ে। ভিক্টোরিয়ান যুগের কবি ছিলেন উনি । তাঁর কবিতায় তিনি একটি নতুন ছন্দের উদ্ভাবন করেন , তা হলো 'স্প্রাঙ'। জন বেলির মতে সারাজীবন হপকিনস ডিপ্রেশনে ভুগেছেন শারীরিক অক্ষমতা এবং আর্থিক ভাবে যারা তাঁকে লুট করেছেন তাদের জন্য। একাকীত্ব তাঁকে গ্রাস করে। তাঁর কিছু বিখ্যাত কবিতা হলো,"দ্য রেক অব ডয়েসল্যান্ড" , "দ্য উইন্ডহোভার, টু ক্রাইস্ট আওর লর্ড"। মৃত্যুর পর তাকে গ্লাসনেভিন কবরস্থানে আয়ারল্যান্ডের সমাধিস্থ করা হয়।)



No comments:

Post a Comment

একঝলকে

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে