Saturday, October 13, 2018

ভিসুয়াভা সিম্বোর্সকা (অনুবাদ- শুভদীপ নায়ক)









আত্মার কিছু কথা
(A Few words on the Soul)


একসময় আমাদের আত্মা ছিল
যাকে কেউ থামাতে পারত না
রাখতে পারত না কাছে

তারপর দিনের পর দিন
বছরের পর বছর পেরিয়ে গেল
তা যেন হারিয়ে গেছে 

কিছুটা সময়
সেই মন টিকে ছিল, সঙ্গে ছিল
শুধু আমার শৈশবের ভয় আর ক্ষতের ভিতরে
কিছু সময় অত্যন্ত বিস্ময়ে ভাবি
আমরা তবে বেশ পরিণত হয়ে গেলাম

অনেক খুঁজে এই হাত পেলাম
প্রভূত সাধনার পরে 
আসবাবপত্র সরে যাওয়ার
আর বোঝা নেমে যাওয়ার পরে
কিংবা কাঁটার জুতো পরে কয়েকমাইল চলার শেষে


আমার জীবন সাধারণত বাইরে চলে যায়
যেভাবে মাংসের প্রয়োজন হয় টুকরো হওয়ার
অখণ্ড আকার পরিপূর্ণ করতে 

হাজার কথোপকথনের পরে
এই একক অংশগ্রহণ
এমনকী যা 
নীরবতা দাবি করে


দেহ যখন ব্যথার দিকে অভিসারী 
কর্তব্য থেকে সে তখন সরে যায়

তুলে নেয় এমন কিছু
যা সে ভিড়ের মধ্যে কাউকে দেখাতে চায় না
সন্দিগ্ধ সুবিধা আসে আমাদের এই ধাক্কায়
কেননা, যন্ত্রের মতো আমরাও ঘিলাম অসুস্থ

আনন্দ আর দুঃখ
এ দুটো কোনও পৃথক জিনিস না
একসঙ্গে যুক্ত হয়ে তারা
ফিরে আসে আমাদের কাছে


আমরা গুনে নিতে পারি 
যখন আমরা তাদের পাই না
আর যখন তাদের পাই সব কৌতূহলে


বস্তুর নিজস্ব পদার্থের ওপরে
যেভাবে ঘড়ি ও পেণ্ডুলামের মতো
তারা কাজ করে, চোখ রাখে আয়নাতে
আর তখনও, যখন কেউ তোমায় দেখছে


কিন্তু সেটা কখনই বলে না যে কোত্থেকে তা আসছে
কিছু প্রশ্নের ভিতর দিয়ে তা জানান দেয়

আমাদের প্রয়োজন তাকে
কিন্তু স্পষ্টভাবে
আমাদের দরকার তাকে
কিছু নিজস্ব কারণের তাগিদে




প্রথম প্রেম
(First Love)


অনেকে বলে 
প্রথম প্রেম খুব গুরুত্বপূর্ণ
ভীষণ আবেগপ্রবণ
কিন্তু আমার তেমনটা হল না 

আমাদের মধ্যে যতকিছু ছিল
পরিস্রুত হয়ে এল, মৃত হয়ে গেল
আমার হাত কেঁপে উঠল
সেইসব স্মৃতিচিহ্নকে ধরে রাখতে গিয়ে
---এমনকী একটা ফিতের মতোও যা নয়


এতগুলো বছরে আমাদের আলাপ
যেগুলো হয়ে উঠেছিল চেয়ার ও ঠাণ্ডা
টেবিলের কথোপকথন

অন্য ভালবাসাগুলো
আমার গভীরে নিঃশ্বাস নিয়েছে ধীরে
কিন্তু এটি যেন শ্বাস নিতে ভুলে গেছে

কিন্তু যে পথে এটা আজও জীবিত
যে কারণে আমি পাই না বিশ্রাম
পুনরায় মনে করতে
সেইসব স্বপ্ন
যা আমাকে মৃত্যুর অভিমুখে নিয়ে যায়




দ্বিতীয়বার কিছুই নয়
(Nothing twice)

দ্বিতীয়বার কোনও কিছুই হয় না
কোনও ঘটনা, এটাই সত্যি 
আমরা যখন সেখানে পৌঁছাই
আমাদের যেন তা অভ্যাসেরও সামান্য সুযোগ দেয় না

যদি সেখানে কোনও বোকালোক না থাকে
যদি তুমি হও এই গ্রহের অপটু শিক্ষক
তা হলেও তুমি গ্রীষ্মকালীন ক্লাস পুনরায় নিতে পারবে না
এমনই বিষয় এটা, যা নিতে হবে একবারেই

গতকালের কোনও প্রতিলিপি নেই
কোনও দু'দিনের শিক্ষা আমাদের গভীর করতে পারে না
ঠিক একইভাবে
একই চুম্বন তা পেরে ওঠে না

একদিন, জিহ্বার খানিক স্বাদে
তোমার নাম উঠে এল, দুর্ঘটনায়
আমারও মনে হল গোলাপেরা নিক্ষিপ্ত হয়েছে
ঘরের ভিতরে, রঙে ও গন্ধে

পরদিন, তুমি এলে এখানে
আমি আর ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকাতে পারলাম না
একটা গোলাপ ? শুধু একটা গোলাপ ? তার কী হল ? 
সেটা কি ফুল না পাথর ? 

কেন আমরা যুদ্ধজাহাজের মতো দিন কাটালাম 
এতগুলো প্রয়োজনহীন ভয় আর দুঃখের সঙ্গে  ? 
এটা যেন স্বভাবতই থাকবার নয়

এই হাসি, এই চুম্বন, যা আমরা চাই
আমাদের যা নিয়ে যায় অসংখ্য তারার নীচে
অস্থিরতায় পৃথক করে
আমাদের দু'ফোটা চোখের জল


No comments:

Post a Comment

একঝলকে

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে