Friday, October 12, 2018

কবিতা- নিজার কব্বানি (অনুবাদ- ঈশানী বসাক)






নিজার কব্বানি

লেখক পরিচিতি: একজন সিরিয়ান কবি এবং ডিপ্লোম্যাট। জন্মগ্রহণ করেন সিরিয়ার দামাসকাসে ২১ মার্চ ১৯২৩ খ্রীষ্টাব্দে। পুরনো দামাসকাসের মিথ না আল শাম এ বড়ো হয়ে ওঠেন। দামাসকাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক হন উনিশশো পয়তাল্লিশে। কলেজ ছাত্র থাকাকালীন প্রথম কবিতার বই দ্য ব্রুনেট টোল্ড হিম। বইটিতে নারী শরীরের বৈদ্যুতিক তরঙ্গ বর্ণিত। বিতর্কের ভয়ে তিনি শিক্ষামন্ত্রী মুনির আল আজলানি কে তা দেখান । তিনি বইটির ভূমিকা লেখেন। তাঁর কবিতা মারজিনাল নোটস অন দ্য বুক অব ডিফিট আরব দেশের ছোট মানসিকতার প্রতিবাদ করে যা সমালোচিত হয়।তাঁর সহজ সরল কবিতায় প্রেম ,শরীর, ধর্ম ,আরবি জাতীয়তাবাদ , নারীবাদ প্রকট। তাঁকে সিরিয়ার জাতীয় কবি বলা হয়। ৩০ এপ্রিল ১৯৯৮-এ তিনি লন্ডনে দেহত্যাগ করেন। 

ভাষা

যখন একটা লোক প্রেমে পড়ে 
তখন কীভাবে সে পুরনো শব্দগুলো বলবে ?
তাহলে একজন মহিলা যিনি তাঁর প্রেমিককে চাইছেন শুয়ে পড়বেন ব্যাকরণবিদ আর ভাষাবিদদের সঙ্গে?

আমি কিছুই বললাম না

যে মহিলাটিকে আমি ভালবাসি

কিন্তু জড়ো করতে লাগলাম প্রেমের বিশেষণ একটা স্যুটকেসে এবং সমস্ত ভাষাদের থেকে পালালাম।



আমার প্রেমিক আমাকে জিজ্ঞাসা করে

আমার প্রেমিক আমাকে জিজ্ঞাসা করে 
বলো তো আমার আর আকাশের মধ্যে তফাত কী?

আমি তাকে বললাম তুমি যখন হাসো সোনা আমি ভুলে যাই আকাশ দেখতে।


প্রতিবার তোমাকে যখন চুমু খাই

প্রতিবার আমি যখন তোমাকে চুমু খাই 
একটা দীর্ঘ বিচ্ছেদের পর 
আমার মনে হয় 
আমি একটা তাড়াহুড়ো করে লেখা প্রেমের চিঠি একটা লাল ডাকবাক্সে ফেলছি ।


ভালবাসার তুলনা

আমি তোমার অন্য প্রেমিকদের মতো নই 
যদি কেউ তোমাকে মেঘ এনে দেয় 
আমি কিন্তু তোমাকে বৃষ্টি এনে দিতে পারি।
সেই প্রেমিক যদি তোমাকে লন্ঠন দেয় 
আমি কিন্তু চাঁদ দিতে পারি তোমাকে।
সে তোমাকে একটা গাছের ডাল দিলে 
আমি কিন্তু তোমাকে গাছটাই এনে দিতে পারি।
আর কেউ যদি তোমাকে জাহাজ এনে দেয় 
আমি তো তোমাকে যাত্রাটাই এনে দেব। 


শীর্ষনামহীন কবিতা

এক

তুমি এখনো আমার জন্মদিন কবে জিজ্ঞাসা করো
তাহলে একটা কথা লিখে ফেলো যা তুমি জানো না
যেদিন তুমি তোমার জন্মদিনের দিনক্ষণ জানালে 
সেটাই আমার জন্মক্ষণ।


দুই

গ্রীষ্মকালে যখন আমি সমুদ্রের ধারে কাটাই আর তোমার কথা ভাবি তখন মনে হয় যদি সমুদ্রকে তোমার ব্যাপারে আমার কী মনে হয় জানাই তাহলে সে সৈকত ছেড়ে চলে যাবে। ছেড়ে যাবে সে সমস্ত ঝিনুক , মাছ আর আমার সঙ্গে চলে আসবে।


তিন 

যখন ই তুমি বেড়াতে যাও তোমার সুগন্ধী আতর আমাকে শিশুর মতো প্রশ্ন করে কবে আমার মা ফিরবে।
ভাবো !!
একটা আতর ও জানে বনবাস আর বিতাড়িতদের গল্প।

চার

তোমার চোখগুলো মুষলধারে বৃষ্টি পড়ার রাত
আমার নৌকাগুলো তাতে ডুবে যায়
আমার লেখাগুলো তাদের প্রতিচ্ছবিতে হারিয়ে
আসলে আয়নাদের স্মৃতি থাকে না।

পাঁচ

একটা মাছের মত 
তাড়াহুড়ো করে ভীরুভাবে প্রেমে পড়ে
আমার অন্তরের হাজার নারীদের খুন করে
তুমি রানী হয়ে গেলে।





No comments:

Post a Comment

একঝলকে

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে